এখানে অনিলাদের পরিবার বলতে শুধু অনিলা আর ওর মা লাবনি ইসলাম।ওর বাবা দেশের বাহিরে থাকেন। দু বছর পরপর দেশে এসে ঘুরে যান।
এইস.এসসি এক্সামের পর এখন অবসরই অবসর অনিলার হাতে।রেসাল্ট আসতেও অনেক দেরি।অনিলার একা একা বাসায় ভালোলাগেনা।আগের বাসার কাছাকাছিই ছিলো ওর সব বান্ধবীদের বাসা।এখন দূর হওয়াতে ওদেরও এদিকে আসা হয়না।অার অনিলারো বের হওয়া হয়না। সারা দিন গল্পের বই পড়েই সময় কাটে ওর।
দুদিন ধরে অবশ্য নিচে নেমে কেয়ার টেকার চাচার সাথে বেশ ভালোই গল্প হচ্ছে অনিলার।গল্প শুধু সেই বলে,আর কেয়ারটেকার চাচা শুধু মুখ গম্ভীর করে নিচের দিকে তাকিয়ে শুনে যায়। কোন কথাই বের হয়না তার মুখ থেকে।অনিলার মাঝে মাঝে খুব বাচাল মনে হয় নিজেকে।কিন্তু তাতে তার কিছু অাসে যায়না।মনের কথা মুখে অানতে পারলেই তার শান্তি।কথা বলতে বড্ড ভালো বাসে সে।
অনিলাদের এই বিল্ডিং টা তিন তলা।নিচের ফ্লোর টা পুরাটা খালি।দোতালায় ওরা,আর তিনতালার ফ্লাট টা মাত্র কমপ্লিট হলো। অনিলা সেদিন কেয়ারটেকার চাচাকে জিজ্ঞেস করলো তিন তলায় ভাড়াটিয়া কবে আসবে?কেয়ার টেকার চাচা ওর প্রশ্ন শুনে মুখ তুলে অনেক্ষণ তাকিয়ে থাকলেন। অনিলাও এতো দিন পর কেয়ারটেকার চাচার চোখের দিকে ভালো ভাবে তাকালো। সব সময় তো মাথা নিচু করেই থাকেন তিনি। আজ তার চোখ দেখে খুব অবাক হলো অনিলা।।গাড় সবুজ রং এর দুটি শীতল চোখ। কেমন যেনো অসাভাবিক একটা ভাব আছে চোখ দুটোয়।সবুজ রং এর চোখতো অনেকেরই হয়।অনিলা দেখেছেও।কিন্তু এই চোখ দেখে খুব ভয় পেয়ে যায় সে।কেয়ারটেকাট চাচার চোখ কি আগেও এমন ছিলো, অনিলা খেয়াল করেনি,নাকি হঠাৎ করে এমন হয়ে গেলো?অনিলা মনে করতে পারছেনা।সে দ্রুত সিড়ি বেয়ে উপরে উঠতে যায়।পেছনে সে শুনে কেয়ারটেকার বলছে,”উনারা খুব তাড়াতাড়িই উঠবেন নতুন বাসায়।”এই উনারা কে বা কারা এটা শুনার ইচ্ছা আর নেই অনিলার।বাসায় ঢুকে দরজা লক করে দেয় সে।
বিকেলে অফিস থেকে ফিরে লাবনি ইসলাম দেখেন অনিলা চুপচাপ বসে আছে সোফায়।অন্য সময় অফিস থেকে ফিরলে অনিলার গল্প শুনতে শুনতে ক্লান্ত হয়ে যান তিনি।কোন গল্পের ক্যারেক্টার কেমন,গল্প এভাবে কেনো শেষ হলো ইত্যাদি ইত্যাদি..। কিন্তু আজকে তার মেয়ে এতো চুপচাপ কেনো।
– কিরে মা,শরীর খারাপ নাকি?আজকে কোন গল্পের বই পড়িসনি,?
– না মা,অাজকে পড়িনি।ভালো লাগছেনা।
-কিছু খেয়েছিস?রাতেতো তোর ফেভারিট ভুনা খিচুরি রান্না করে ফ্রিজে রেখে গেসি,দেখেছিস?
-না মা..ফ্রিজ খুলে দেখিনি। এখন দাও একটু গরম করে। হ্মিধে পেয়েছে।
লাবনি ইসলাম খাবার গরম করতে রান্না ঘরের দিকে গেলেন।
অনিলা বুঝতে পারছেনা মা কে কেয়ারটেকার চাচার কথা বলবে কিনা! মা তো মনে হয় হেসেই উরিয়ে দিবে।থাক, বলার দরকার নেই।
অনিলা তার মাকে কিছু আর বলেনা কেয়ারটেকার এর চোখের কথা।কিন্তু মনে খুতখুত থেকেই যায় অনিলার।
রাত নয়টার দিকে অনিলা আর ওর মা বসে
টিভি দেখছিলো।রিমোট সবসময় অনিলার কাছে থাকলেও আজকে একবারও রিমোট এ হাত দেয়নি সে।লাবনি ইসলাম আড় চোখে মেয়েকে দেখে বুঝার চেস্টা করছেন হঠাৎ তার এই পরিবর্তন এর কারন কি..।কলিংবেল বেজে উঠলো। অনিলা দরজার লুকিং গ্লাস দিয়ে দেখলো কেয়ারটেকার চাচা।অনিলা বুঝতে পারছেনা সে দরজা খুলবে কিনা।সকালের সেই চোখের কথা এখনো তার মাথাতে ঘুরছে।
-কিরে কে এসেছে?দরজা খুলে দেখ।
অনিলা দরজা ধরে দাড়িয়ে থাকলো
-আজকে যে কি হয়েছে তোর।সরে দাড়া।আমি দেখছি কে এসেছে। লাবনি ইসলাম দরজা খুলে বলেন, ওহ,কেয়ারটেকার ভাই,আপনি।
“জি,আপা।আপনি অফিসে যাওয়ার আগে বলেছিলেন না মশার কয়েল কিনে রাখতে,এই যে সেটা।আর এই নেন বাকি টাকা”। বিশ টাকার একটা চকচকে নোট দিলো সে। অনিলা মায়ের পেছনেই দাড়িয়ে ছিলো।সে মনে মনে আরেকবার কেয়ারটেকার এর চোখ ভালোভাবে দেখার কথা ভাবলো।মায়ের পাশ থেকে উঁকি দিয়ে তাকালো সে। নাহ।খুব স্বাভাবিক চোখ কেয়ারটেকারের।একজন,, পঞ্চান্ন বয়সের লোকের চেহারা, চোখ এমন সাধারন ই হয়।এর মাঝে কোন অস্বাভাবিকতা একদম নেই।অনিলা নিজের রুমের দিকে চলে যায়।সকালে যে সে কেয়ারটেকার এর চোখ অসাভাবিকতা দেখেছিল সে এই ব্যপারে একদম নিশ্চিত। অনিলা সিধান্ত নেয় সে আর কেয়ারটেকার এর সাথে গল্প কথা বলতে যাবেনা।
পুরোটা সপ্তাহ অনিলা বাসা থেকে আর বের হয়নি।টিভি দেখে, বই পরে কাটিয়ে দিয়েছে।কেয়ারটেকার এর চোখের ব্যপারটা মাথা থেকে পুরোপুরি যায়নি যদিও। আজকে ভাবছে একটু ছাদে যেয়ে হেটে আসবে।মায়ের অফিস থেকে ফিরতে দেরি আছে আরও। অনিলা তিন তলার ফ্লাট এর সিড়ি বেয়ে ছাদের দরজার দিকে উঠতে যায়।হঠাৎ ওর মনে হলো এই তিন তলার ফ্লাটের দরজা টা খোলা,চাপিয়ে রাখা।নতুন ভাড়াটিয়া আসলো নাকি,যেয়ে দেখবো নাকি,নিকেই প্রশ্ন করে অনিলা।ছাদে না যেয়ে ওই ফ্লাটের দরজার সামনে দাঁড়ায় সে।
– কেউ কি আছেন?তিনবার ডাকে অনিলা।কোন সাড়া শব্দ নেই।অনিলা আস্তে করে দরজা সরিয়ে ভেতরে পা রাখে।ভিতরে ঢুকে দেখে সে বিশাল বিশাল সব আসবাবপত্র। কারুকার্য খচিত সোফা,খাট,কারপেট,এমনকি বিশাল এক ঝারবাতিও আছে।আজকালকার দিনেতো এমন ফার্নিচার খুব কম মানুষ ই ব্যবহার করে। অনিলা ভাবতে থাকে,তবে এসব যার পছন্দ তার রুচি আছে বলতে হবে।সব কিছুই চোখ ধাঁধানো সুন্দর।
– আসসালামু আলাইকুম। অনিলা পেছন থেকে মেয়েলি কন্ঠের সালাম শুনতে পায়। মনে মনে লজ্জায় পরে যায় সে।কি ভাববে,কার ঘরে আমি না বলেই ঢুকে গেলাম।অনিলা পেছনে ফিরে তাকায়,পেছনে ফিরে সে মনে কয়েকশো ভোল্টের শক্ খায়।যেই মেয়েটি তাকে সালাম দিয়েছে সে প্রায় সাত ফিট লম্বা।আর মারাত্মক রকমের সুন্দরী। মেয়েটা চেহারা থেকে যেন আলো ঠুকরে বের হচ্ছে।তার চুল ছাড়া, প্রায় পায়ের পাতা ছুয়ে যাচ্ছে। মিষ্টি সুবাশে ভরে গেছে ঘর।অনিলার মাথা উচু করে মেয়েটার দিকে তাকিয়ে থাকে।
-অামি সালাম দিয়েছি আপনাকে।মেয়েটা মুচকি হাসি দিয়ে বলে অনিলাকে।
– ও হা..ওয়ালাইকুমাসসালাম।বোকার মত হাসি দিয়ে তাকিয়ে থাকে অনিলা।সে এখনো বুঝতে পারছেনা,মানুষ কিভাবে এতো সুন্দর হয়।সে চোখে ভুল দেখছে নাতো?
– আপ্নিও কিন্তু খুব সুন্দর। মেয়েটি অনিলা কে বলে।অনিলা চমকে যায়।মেয়েটা কিভাবে বুঝলো যে অনিলা কি ভাবছে মনে মনে?
-দাঁড়িয়ে কেনো? প্লিজ বসুন।অনিলাকে বসতে বলে নিজেও একটা সোফায় বসে মেয়েটা।
-অাপনারা দোতলায় থাকেন,তাইনা।
– “জি,অামার নাম অনিলা।ছাদে যাচ্ছিলাম,দরজা খোলা দেখে ভাবলাম নতুন এসেছেন পরিচিত হয়ে নেই।” ঢোক গিলে এক নিঃশ্বাসে বলল অনিলা। এখনো সাভাবিক হতে পারছেনা মেয়েটা কে দেখেসে। অনিলা নিজেরো খুব সুন্দরী বলে নাম ডাক আছে বন্ধু মহলে।কিন্তু এই মেয়েটিকে স্বাভাবিক সুন্দরী বলে মোটেও মনে হচ্ছেনা।অনিলার হিংসে হচ্ছে নাতো মেয়েটিকে দেখে!
– আমি আফসানা।আমরা এক সপ্তাহ হলো এসেছি।আমি ছাদেই ছিলাম।মেয়েটি এখনো হাসি দিয়েই আছে।কে কে আছে আপনার বাসায়?
– আমি আর আমার মা।মা জব করেন।বাসাতে একাই থাকি। তাই একটু ছাদে যাচ্ছিলাম।
– ওহ তাই,আপনি একটু বসুন, আমি ভেতর থেকে আসছি। মেয়েটি উঠে ভেতরে যায়।
অনিলা খেয়াল করে মেয়েটি একটা ধব ধবে সাদা গাউন টাইপ জামা পরেছে।পা পর্যন্ত ঢাকা।সাদা ওরনা দিয়ে মাথায় কাপড় দেয়া।যদিও চুল ঢাকা পরেনি।মেয়েটির বয়স কেমন হতে পারে?নিজেকে জিজ্ঞেস করে অনিলা।সে মানুষের বয়স অান্দাজ করাতে খুব পটু। কিন্তু এখন কিছুতেই ঠাহর করতে পারছেনা অনিলা এই মেয়েটার বয়স। তার মনে হচ্ছে সতেরও হতে পারে,অাবার সাতাশো হতে পারে।এমন কি সাইত্রিশও হতে পারে।অনিলার কেমন
যেনো অস্থির লাগা শুরু হয়।অনিলা তাকিয়ে দেখে আফসানা মেয়েটা একটা বড় পিতলের বাটিতে করে খাবার নিয়ে আসছে।
– কি দরকার ছিলো এতো কিছুর।অনিলা ভদ্রতা করে বললো।কিন্তু বলেই বুঝতে পারলো তার খুব হ্মুধা লেগেছে।দুপুরে কিছুই খাওয়া হয়নি।
– আপনি হ্মুধার্ত। কিছু খেয়েনিন।ভালো লাগবে।হাসি দিয়ে বললো মেয়েটা। অনিলা দেখলো বাটিতে বিভিন্ন ধরনের মিষ্টান্ন।এমন মিষ্টি অাগে কখনো খায়নি,দেখেওনি সে। গোলাপী রংএর একটা মিষ্টি মুখে দেয় অনিলা।মুখে দিয়েই বুজলো অনিলা, এমন স্বাদের মিষ্টি সে কোনো দিনও খায়নি।সে টুপ করে আরো কয়েক্টা মিষ্টি মুখে পুরে দিলো।
– আরো কয়েক টা নিয়ে আসি?আপনার খুব ভালো লেগেছে মনে হচ্ছে। মেয়েটা অনিলা কে বলল।
অনিলা মিষ্টি চাবানো বাদ দিয়ে মুখ বন্ধ করে হাতে ইশারারা করে বুঝালো অার লাগবেনা।
মেয়েটি এক দৃষ্টিতে অনিলার দিকে তাকিয়ে থাকে।অনিলা অস্বস্থি তে পরে যায়।বাসায় যাওয়ার জন্য উঠে দাঁড়ায়।
– আরো কিছুক্ষণ বসুন না।আফসানা মেয়েটা অনিলা কে বলল।
– আরেকদিন আসবো।মা অফিস থেকে চলে আসবে। আপনি একদিন আসুন না আমাদের ফ্লাট এ।আমিতো একাই থাকি।
– আমার যাওয়া হবেনা। আপনিই আসবেন।মেয়েটি কেমন করে যেনো বলল কথাটা।অন্য কেও হলে বোধ হয় এতোক্ষণ অনিলার অহমে লাগতো।কিন্তু এই মেয়ের কথা শুনে তার মনে হলো অনিলারই যেনো এখানে প্রতিদিন আসতে হবে।
– ঠিক আছে আমিই আসবো। জোর করে মুখে হাসি এনে অনিলা বেরিয়ে যায় । মাথাটা খুব ঘুরছে তার। বাসায় যেয়ে শুয়ে পরে।
Facebook Comments
People Came Here By Searching :
Jokes, bangla golper boi, bangla jokes pdf, bengali jokes pdf, bangla jokes book pdf download, gopal bhanrer 111 hasir golpo, bangla jokes pdf free download, bangalir hasir golpo, bdjobs, yo mama jokes, adult jokes, funny jokes app, school jokes, funny jokes dirty, jokes app, joke book, short funny jokes, jokes in english, dad jokes, funny jokes, jokes, jokes for kids, dirty jokes, yo mama jokes, adult jokes, funny jokes dirty, short funny jokes, hilarious jokes, clean jokes, really funny jokes, good jokes, funniest jokes ever, funniest joke in the world, inappropriate jokes, short jokes, deez nuts jokes, blonde jokes, bad jokes, offensive jokes, pun jokes, mom jokes, little johnny jokes,
jokes dirty, hilarious jokes, jokes for adults, very funny jokes, funny jokes clean, seriously funny jokes, dad jokes, corny jokes, , seriously funny jokes, funny jokes clean, funny jokes dirty, i need a funny joke, very funny jokes in english, most hilarious joke, funny knock knock jokes, funny jokes for adults, , clean jokes that are actually funny, funniest clean joke ever, greek jokes clean, clean joke of the day, somewhat clean jokes, long clean jokes, edgy clean jokes, i need a funny joke, funny jokes for kids(10-11), sick kid jokes, funny jokes for kids: 100 hilarious jokes, funny jokes for kids(8-9), funny jokes for kids(10-11) in hindi, kids joke of the day, silly jokes, jokes and riddles, , silly jokes for adults, funny silly jokes, 25 silly jokes, crazy silly jokes, seriously funny jokes, very funny jokes, hilarious jokes, awesome jokes, Jokes, bangla golper boi, bangla jokes pdf, bengali jokes pdf, bangla jokes book pdf download, gopal bhanrer 111 hasir golpo, bangla jokes pdf free download, bangalir hasir golpo, bdjobs, yo mama jokes, adult jokes, funny jokes app, school jokes, funny jokes dirty, jokes app, joke book, short funny jokes, jokes in english, dad jokes, funny jokes, jokes, jokes for kids, dirty jokes, yo mama jokes, adult jokes, funny jokes dirty, short funny jokes, ilarious jokes, clean jokes, really funny jokes, good jokes, funniest jokes ever, funniest joke in the world, inappropriate jokesshort jokes, deez nuts jokes, blonde jokes, bad jokes, offensive , jokes, pun jokes, mom jokes, little johnny jokes

No comments:
Post a Comment